বোরখা: লজ্জা, সম্মান না পুরুষতান্ত্রিক অসমতার প্রতীক?


ভূমিকা: 

হ্যালো, বন্ধু! এই ধরনের আলোচনা প্রায়ই উঠে আসে যেমন—কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক থেকে শুরু করে ২০২৫-এর আফগানিস্তানের তালিবান নিয়মাবলী পর্যন্ত। বোরখা কি আসলেই সম্মানের প্রতীক, না এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের একটা হাতিয়ার যা নারীদের উপর একটি দায় ভার চাপায়? কিছু দিন আগে একজ মুসলিম নারী হিন্দুদের বোরখা না পড়াকে কেন্দ্র করে একটি কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তার মতে যারা বোরখা পড়ে না, তারা চরিত্রহীন। সেই সকল নারীরা পর পুরুষকে কামুক শরীর দেখিয়ে উত্তেজিত করে। তাই বোরখা নিয়ে এই প্রতিবেদন লিখতে বসলাম।

বোরখার ঐতিহাসিক শিকড়: 

প্রথমে বোরখার উৎপত্তি বুঝে নেওয়া যাক। বোরখা আসলে ইসলাম আসার বহু আগে থেকেই ছিলো। —এই বোরখা পারস্য অর্থাৎ (বর্তমান ইরান) থেকে এসেছে, যেখানে এটা উচ্চবর্গের নারীদের জন্য ব্যবহৃত হতো। আরব অঞ্চলে ইসলামের আগে 'বুরকা' শব্দটি প্রচলিত ছিল। মেসোপটেমিয়া এবং সাসানিয়ান পারস্যে নারীদের আচ্ছাদন এবং বিচ্ছিন্নতার প্রথা ছিল। এমনকি খ্রিস্টান এবং ইহুদি নারীরাও এ ধরনের পোশাক পরতো। ভারতে নারীদের পর পুরুষ ও গুরুজন দের সামনে মাথায় কাপড় বা ঘোমটা দেওয়ার প্রথা ছিলো। এখনো অনেক গ্রাম অঞ্চলে আছে। তাই, প্রথমেই বলে রাখি, বোরখা, ঘোমটা দেওয়া নিয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনো অপত্তি নেই। আপত্তি হলো এর প্রচারে। 

কুরআনে বোরখার বা এ ধরনের পোশাকের কোনো সরাসরি উল্লেখ নেই—এটা মূলত বহু সাংস্কৃতিক মিশ্রণের ফল। ১৮৯০-এর দশকে আফগানিস্তানের আমির তার হারেমের নারীদের (যার মধ্যে যৌন দাসীরাও ছিলো) ঢেকে রাখার জন্য এই প্রথা চালু করেন, যাতে অন্য পুরুষরা তাদের দেখে প্রলোভিত না হয়।

হারেম প্রথায় পুরুষরা একাধিক নারী রাখতো, কিন্তু লজ্জা রক্ষার দায়িত্ব শুধু নারীদের জন্য ছিলো। প্রাক-ইসলামী আরবে নারীদের অবস্থা মিশ্র ছিল—কিছু উপজাতিতে স্বাধীনতা থাকলেও, সামগ্রিকভাবে সমাজ পুরুষতান্ত্রিক ছিল।

আমার ধর্মীয় দৃষ্টিতে, এই ধরনের আচ্ছাদন ভুল কিছু নয় কিন্তু অদ্বৈতবাদের তর্কের দিক থেকে—এটা কেবল শরীরকে দেখে বিচার করা হচ্ছে, যা ব্রহ্মের একত্বের সাথে যায় না। যদি নারী শরীরেও আমার মতই ব্রহ্ম থাকেন, তবে ব্রহ্ম কেন বিচলিত হবে। যদি বিচলিত হয়, তবে বুঝতে হবে ব্রহ্মতে অভেদ বুদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। 

মায়ের মুখ দেখে যেভাবে শিশু বা যুবক কামাতুর হয় না। অন্যান্য নারীদের দেখেও সেরকম ভাব থাকতে হবে। তবেই তো পুরুষ।

অপত্তি দেহকে ঢেকে রাখার চেষ্টা দিয়ে নয়। অপত্তি একে জোর করে অন্যের ওপর চাপানো। অর্থাৎ যারা বোরখা পরে না বা নিজের আব্রু রক্ষা করে না তাদের চরিত্রহীন বলা ঠিক নয়। বা তাদের নিয়ে খারাপ মানসিকতা রাখা উচিত নয়।

তুলনামূলক টেবিল: বোরখা এবং লিঙ্গ নিয়ম—পুরুষ বনাম নারী

বৈশিষ্ট্য নারীদের উপর (বোরখা/হারেম) পুরুষদের উপর
আচ্ছাদনের নিয়ম সম্পূর্ণ শরীর ও মুখ ঢেকে রাখা (লজ্জা রক্ষা/সুরক্ষা) কোনো বাধ্যতামূলক আচ্ছাদন নেই
হারেম প্রথা একাধিক নারীকে বিচ্ছিন্ন রাখা, যৌন দাসত্বের মতো পুরুষরা মালিক হিসেবে স্বাধীন, কোনো বিধিনিষেধ নেই
লজ্জা/সম্মানের দায়িত্ব নারীদের উপর ভার, অসম্মান হলে শাস্তি পুরুষরা নিয়ন্ত্রক, সমান নিয়মের অভাব
ঐতিহাসিক উদাহরণ তালিবান শাসন: বোরখা ছাড়া চিকিৎসা বা বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ পুরুষরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে

এই টেবিলটা দেখলেই বোঝা যায়, নিয়মগুলো কতটা অসম।

সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য: সম্মান না অত্যাচার?

অনেক মুসলিম নারী বোরখাকে তাদের পরিচয় এবং লজ্জা রক্ষার প্রতীক হিসেবে দেখেন, যা তাদের সুরক্ষা দেয় এবং সম্মান বাড়ায়। কিন্তু বিবেক দিয়ে বিচার করলে, এটা  সম্মান নয় বরং অপমান—যেখানে নারীদের দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয় পুরুষদের দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করার। ২০২৫-এ আফগানিস্তানে তালিবানের নিয়মে বোরখা ছাড়া হাসপাতালে প্রবেশ নিষিদ্ধ, যা অনেক নারীর জীবনকে কঠিন করে তুলেছে।

হারেমের প্রেক্ষাপটে দেখলে, পুরুষরা একাধিক নারী রাখতো, কিন্তু নিয়মাবলী শুধু নারীদের উপর। কুরআন লিঙ্গ সমতার কথা বললেও, সাংস্কৃতিক ব্যাখ্যা প্রায়ই অসমতা সৃষ্টি করে। আমার অদ্বৈত চিন্তায়, এই বিভাজনগুলো মায়া মাত্র—লিঙ্গ অসমতা দ্বৈতবাদের ফল।

আমি মাঝে মাঝে হাসি যখন ভাবি: পুরুষরা কেন বোরখা পরে না? এই প্রশ্নটা একবার নিজেকে করবেন।

ফেমিনিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি ২০২৫-এ: অহংকার না অধিকারের লড়াই?

২০২৫-এ ফেমিনিস্ট আন্দোলনগুলো বোরখাকে অত্যাচারের প্রতীক হিসেবে দেখছে। একজন বিখ্যাত ফেমিনিস্ট লেখক বলেছেন, "বোরখা নিষিদ্ধ করা উচিত—এটা নারীদের দায়িত্ব করে না, বরং পুরুষদের আচরণের জন্য তাদের শাস্তি দেয়।" অন্যরা এটাকে পিতৃতান্ত্রিক টুল বলে মনে করেন। আয়ান হির্সি আলির মতো প্রাক্তন মুসলিম অ্যাকটিভিস্টরা এটাকে নারীদের অপমানজনক বলে দাবি করেন।

তবে সবাই একমত নয়—কিছু তথা কথিত ফেমিনিস্ট বোরখা ব্যানের বিরোধিতা করেন, বলেন এটা নারীদের চয়েসের অধিকার। আধুনিক শিক্ষিত সমাজে এটা কোনো অহংকারের বিষয় নয়, বরং অসমতার প্রতীক। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলো দেখলে বোঝা যায়, অনেকে এটাকে উপনিবেশিকতা এবং মিসোজিনির সাথে যুক্ত করে দেখে।

আমার মতে, অদ্বৈত হিসেবে, সত্যিকারের সমতা অভ্যন্তরীণ—পোশাক দিয়ে নয়। কিন্তু যদি এটা কারো ওপর জোর করে চাপানো হয়, তাহলে এটা অধিকার লঙ্ঘন।

অদ্বৈত দর্শন থেকে বিশ্লেষণ: বিভাজনের উর্ধ্বে উঠুন

অদ্বৈত বেদান্তে, সবকিছু এক—পুরুষ-নারী, বোরখা-অনাচ্ছাদন সবই দ্বৈতবাদী মায়া। এই প্রথাগুলো ভয় থেকে উদ্ভূত, যা লিঙ্গ বিভাজন সৃষ্টি করে। সত্যিকারের মুক্তি হলো অখণ্ডতায় পৌঁছানো। বোরখা যদি স্বেচ্ছায় পরা হয়, তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু চাপানো হলে এটা অসমতা বাড়ায়।

উপসংহার: পরিবর্তনের দিকে এগোনো

তোমার মতামত একদম সঠিক—বোরখা প্রায়ই লিঙ্গ অসমতার প্রতীক, না শুধু সম্মানের। ২০২৫-এ, আমাদের নারীদের চয়েস সম্মান করতে হবে, কিন্তু সামাজিক চাপ প্রতিরোধ করতে হবে। এই ধরনের আলোচনা শুরু করো—এটা পরিবর্তন আনবে। তোমার আরও চিন্তা কী? কমেন্ট করে জানাও!

FAQ

বোরখা কি সত্যিই ইসলামী প্রথা?

না, এটা প্রাক-ইসলামী পারস্য থেকে এসেছে, কুরআনে সরাসরি উল্লেখ নেই।

কেন বোরখা লিঙ্গ অসমতার প্রতীক?

হারেম প্রথায় পুরুষরা একাধিক নারী রাখতো, কিন্তু নিয়ম শুধু নারীদের উপর চাপানো হতো।

ফেমিনিস্টরা বোরখা নিয়ে কী বলেন?

কেউ অত্যাচার বলে, কেউ চয়েস হিসেবে দেখেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন
Hostinger Black Friday Sale – Starting from ₹129/mo Promotional banner for Hostinger Black Friday deal: AI website builder, free domain, extra months. Pre-book now. Black Friday Sale Bring Your Idea Online With a Website From ₹129.00/mo + Extra Months & Free Domain Pre-Book Now HinduhumAds

Advertisement

Hostinger Black Friday Sale – Starting from ₹129/mo Promotional banner for Hostinger Black Friday deal: AI website builder, free domain, extra months. Pre-book now. Black Friday Sale Bring Your Idea Online With a Website From ₹129.00/mo + Extra Months & Free Domain Pre-Book Now HinduhumAds