Headlines
Loading...
Omnipotent Paradox: ঈশ্বর কি এমন কোনো পাথর তৈরী করতে পারবেন যা তিনি নিজে তুলতে পারবেন না?

Omnipotent Paradox: ঈশ্বর কি এমন কোনো পাথর তৈরী করতে পারবেন যা তিনি নিজে তুলতে পারবেন না?


নাস্তিকরা নিজের যুক্তি উপস্থাপন করতে বিভিন্ন ধরনের প্যারাডক্স উল্লেখ করেন। এর মধ্যে আমার সবথেকে জনপ্রিয় হল সর্বশক্তিমান প্যারাডক্স। কারণ, এই প্যারাডক্স ঈশ্বরের সর্ব শক্তিমান্যতাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে। প্রথম প্রশ্ন হলো:

"ঈশ্বর কি এমন একটি পাথর তৈরি করতে পারেন, যেটি তিনি নিজেই তুলতে পারবেন না?"

এটি নাস্তিক ও যুক্তিবাদীদের প্রিয় অস্ত্র। তারা যুক্তি দেন:

  • যদি ঈশ্বর পারেন, তবে তিনি তা তুলতে পারেন না — অর্থাৎ তিনি অক্ষম। 
  • যদি না পারেন, তবে তিনিই সর্বশক্তিমান নন।

তাদের দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, “ঈশ্বর কি পাপ করতে পারেন?”

এভাবে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ উভয় উত্তরই ঈশ্বরের সর্বশক্তিমত্তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। যেহেতু, অন্যান্য ধর্মে (যেমন খ্রিস্টধর্ম বা ইসলাম) ঈশ্বর ও জগৎকে পৃথক সত্তা হিসেবে দেখা হয়, যা পাথরের প্যারাডক্সকে আরও জটিল করে। কিন্তু হিন্দু অদ্বৈত দর্শনে, সবকিছুই ব্রহ্মের প্রকাশ, তাই পাথর, তুলতে না পারা, বা পাপের ধারণা ব্রহ্মের মায়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে। এই প্রশ্নের উত্তর আমি হিন্দু ধর্মের ভিত্তিতে দেওয়ার চেষ্টা করবো। 


প্রথমে ওই প্যারাডক্স ভালো করে বুঝুন। যদি ঈশ্বর এমন এক পাথর তৈরী করে ফেলেন তবে তিনি অক্ষম প্রমাণিত হবেন। কারণ প্যারাডক্স অনুযায়ী সেই পাথর তিনি তুলতে পারবেন না।আবার, যদি না পারেন, তবে তিনি সর্বশক্তিমান নন এটা তো এমনিই প্রমাণিত হয়ে যায়।

আমি বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের যুক্তি ও তর্ক গুলো শুনেছি। তারা কেউ কেউ একে একটি স্ববিরোধী প্রশ্ন বলেছেন, কেউ কেউ একে অযৌক্তিক দাবি করেছেন। এটি কোনো অযৌক্তিক প্যারাডক্স নয়। ঈশ্বর যদি সত্যিই সর্বশক্তিমান হন তবে এই অযৌক্তিক দাবির জবাবও তাঁর কাছে থাকা উচিত।

বর্গাকার বৃত্ত ও ঈশ্বরের সর্বশক্তিমত্তা

অনেকেই বলে থাকেন এই প্যারাডক্স অযৌক্তিক কারণ এটি একটি বর্গাকার বৃত্ত তৈরী করার মতো অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু ঈশ্বরের তো ক্ষমতার কোনো সীমা নেই। তিনি তো এটি করতেই পারেন। আপনি প্রশ্ন করবেন কিভাবে? 

বর্গাকার বৃত্ত" সাধারণ যুক্তি ও জ্যামিতির দৃষ্টিকোণে একটি স্ববিরোধী ধারণা, কারণ বর্গ এবং বৃত্ত সংজ্ঞাগতভাবে ভিন্ন আকৃতি। কিন্তু আমি  দৃষ্টিকোণ বদলের কথা বলছি। হিন্দু দর্শনে, ঈশ্বর (ব্রহ্ম বা বিষ্ণু) মায়ার নিয়ন্ত্রক। তিনি জগতের নিয়ম, যেমন জ্যামিতি বা পদার্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞা, তৈরি করেন এবং চাইলে তা পরিবর্তন করতে পারেন। 

আমরা সবাই জানি চারটি সরল রেখা দিয়ে বর্গ তৈরি হয়। কিন্তু ঈশ্বরের সৃজনশীল শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দ্বারা মানুষের যুক্তির সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করার ক্ষমতার তাঁর আছে।

তিনি চাইলেই সরল রেখাকে বক্র রেখায় রূপান্তর করতে পারেন —  তিনি প্রথমে চারটি সরল রেখা অঙ্কন করে তাদের দ্বারা একটি বর্গক্ষেত্র বানাবেন তারপর ঐ সরল রেখাগুলোকে বক্র করে দেবেন। এভাবেই বৃত্তাকার বর্গ তৈরী হলো।

এটি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ধারণার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেমন অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতি, যেখানে সরল রেখা বা বক্রতা দৃষ্টিকোণের উপর নির্ভর করে। ঈশ্বর, যিনি সৃষ্টির সব নিয়মের স্রষ্টা, এমন একটি জ্যামিতিক বাস্তবতা তৈরি করতে পারেন যেখানে বর্গাকার বৃত্ত সম্ভব।

২+২=৫ কি সম্ভব?

মডুলার অ্যারিথমেটিক একটি সিস্টেম যেখানে সংখ্যাগুলো একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে "ঘুরে" বা "লুপ" করে। মডুলার অ্যারিথমেটিককে প্রায়শই "ক্লক অ্যারিথমেটিক" বলা হয়, কারণ এটি ঘড়ির কাঁটার মতো কাজ করে—যেমন, ১২ ঘণ্টার ঘড়িতে ১২ এর পর আবার ১ আসে। সেই গাণিতিক যুক্তি দ্বারাও ২+২=৫ প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তবে এরকমই একটি গাণিতিক পদ্ধতি ঈশ্বর সৃষ্টি করাতে পারেন, যার দ্বারা ২+২=৫ সম্ভব হবে হতে পারে যে ফলাফলে  যা আমরা পাঁচ বলছি সেটি আসলে চার হবে। 

ঈশ্বরনিজের মায়ার দ্বারা সংখ্যা তত্ত্বের এমন কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন বা নতুন ধরনের সংখ্যা তত্ত্ব উদ্ভাবন করতে পারেন যার দ্বারা ২+২=৫ হবে।

যে ঈশ্বর মানুষের সংজ্ঞার ঊর্ধ্বে গিয়ে এমন কিছু সৃষ্টি করতে পারেননা তিনি কি ভাবে সর্ব শক্তিমান হতে পারেন? এটি কেবল হিন্দু সনাতন ধর্মের ঈশ্বরের কাছে আছে। কারণ, একমাত্র হিন্দু ধর্মই মায়া ও ব্রহ্মের তর্ক দেয়।  উক্ত পাথরের প্যারাডক্স সমাধানে ফেরত আসি।

প্রশ্নের মূলতত্ত্ব আমরা পুরাণ-এর এক বিখ্যাত ঘটনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারি —

হিরণ্যকশিপু ও নরসিংহ অবতার।

যেভাবে হিরণ্যকশিপু ভেবেছিল, কেউ তাকে পরাজিত করতে পারবে না, সেভাবেই যুক্তিবাদীরা ভাবে — “ঈশ্বরের পক্ষে কি সবকিছু করা সম্ভব?”

হিরণ্যকশিপুর কৌশল কি ছিলো?

হিরণ্যকশিপু চেয়েছিলেন নিজেকে এমনভাবে অমর করে তুলতে, যাতে এই জগতে কেউ তাঁকে হত্যা করতে না পারেন। তিনি ব্রহ্মার কাছ থেকে খুব চতুর ভাবে একটি শর্তসাপেক্ষ বর চেয়েছিলেন:

  • না দিবসে, না রাত্রে,
  • না ঘরে, না বাইরে,
  • না মানুষ, না জন্তু, না দেবতা,
  • না অস্ত্র, না বর্ম বা শস্ত্র দ্বারা,
  • না স্থল, না জল, না আকাশে,

তার ধারণা ছিল, এত শর্ত মিলিয়ে কেউই তাকে মারতে পারবে না — এমনকি ঈশ্বরও নয়। তবে ঈশ্বর শর্ত ভাঙেননি, বরং সব শর্ত পূরণ করেই হিরণ্যকশিপুকে পরাজিত করেন।

তিনি নরসিংহ রূপে আসেন (অর্ধমানব, অর্ধসিংহ) — মানে না মানুষ, না জন্তু। গৃহের চৌকাঠে তাকে হত্যা করেন — মানে না ঘরে, না বাইরে। গোধূলি লগ্নে — মানে না দিবসে, না রাত্রে। নিজের নখ দিয়ে — মানে কোনো অস্ত্র নয়। তাকে কোলে বসিয়ে বধ করেন — মানে না ভূমি, না আকাশে।তাহলে বুঝুন। এটাও একটা প্যারাডক্স ছিলো। 

অর্থাৎ ভগবান বিষ্ণুই একমাত্র এই প্যারাডক্স থেকে মুক্তি দিতে পারেন। তাই, তাঁর স্মরনাপন্ন হলাম। তিনি ইঙ্গিতের দ্বারা আমায় এই প্যারাডক্স বুঝিয়ে দিলেন। যে তিনি বলছেন—

“হ্যাঁ, আমি এমন একটি পাথর সৃষ্টি করতে পারি, যেটি আমি তুলতে পারি না — সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন আমি নিজেই সেই পাথরের ওপর বসে থাকি এবং তোলার চেষ্টা করি।”

এটি একটি পদার্থবিজ্ঞানের বাস্তব দৃষ্টান্ত — আপনি যতই শক্তিশালী হন না কেন। আপনি যদি কোনও বস্তুর ওপর বসে থাকেন, এবং আপনি সেই বস্তুকে টেনে তুলতে চেষ্টা করেন। আপনি তাহা পারবেন না।

এটা দেখায়: ঈশ্বর নিজেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেন, যেখানে তাঁর শক্তির সীমাবদ্ধতা নয়, বরং তাঁর ইচ্ছায় সৃষ্ট কাঠামোর নিয়ম

হ্যা এটা একটা চালাকি। তবে, এটি শ্রী হরি বিষ্ণুর একটি বৈশিষ্ট্যও বটে। 

যদি শর্ত থাকে যে ঈশ্বর ওই পাথরের ওপর বসে থাকতে পারবেন না। 

অর্থাৎ পাথরটি তুলতে হলে তাঁকে বাইরে থেকে তুলতে হবে, এবং সেই পাথর এত ভারী যে তিনি নিজে তা তুলতে পারছেন না — তাহলে আমরা জিজ্ঞেস করব ঐ পাথরকে কোথায় রাখা হবে? এবং তিনি কোথায় দাঁড়িয়ে ওই পাথরকে তুলবেন?” এখানেই যুক্তির গভীরতা লুকিয়ে আছে।

যেহেতু ঈশ্বর নিজেই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, তাহলে এমন একটি বস্তু তৈরি করলে তাকে রাখতে হবে তাঁরই সৃষ্ট জগতের কোনো এক প্রান্তে। কিন্তু যদি সেই পাথরের ওজন এত বেশি হয় যে মহাবিশ্বও তাকে ধারণ করতে পারবে না। তাহলে ঈশ্বর কি নতুন একটি বাস্তবতা বা মাত্রা সৃষ্টি করবেন শুধুমাত্র পাথর রাখার জন্য?

তাই, হিন্দু শাস্ত্রের ব্যাখ্যা অনুযায়ী "ব্রহ্ম সত্য জগত মিথ্যা।" বা “এক ব্রহ্ম দ্বিতীয় নাস্তি নাস্তি নাস্তি কিঞ্চিৎ নাস্তি”  ওই পাথর সায়াং ঈশ্বর নিজেই। তাই, তিনি সর্ব শক্তিমান এই প্যারাডক্স কেবল মাত্র হিন্দু ধর্মের ভিত্তিতেই প্রমাণিত হয়। অন্যান্য ধর্ম গুলোতে জগৎ এবং ঈশ্বর ভিন্ন ভিন্ন। 



🔍 এই ধরনের প্রশ্নকে অনেক দার্শনিকরা বলেন “Category Error” — অর্থাৎ, এমন জিনিস দাবি করা যা স্বাভাবিক নিয়মেই অযৌক্তিক।

যেমন:

"বাস্তব কি কখনো অবাস্তব হতে পারে?"  বা “বৃত্ত কি কখনো ত্রিভূজ হতে পারে?”— এটি শব্দের অসঙ্গতির উদাহরণ, বাস্তবের নয়।

একইভাবে “ওই পাথর তুলতে না পারা ” ঈশ্বরের শক্তির সীমা নয়, বরং একটি যুক্তির ফাঁদ, যেখানে ভাষা ও যুক্তি নিজেই বিভ্রান্তিকর। একই প্রশ্ন যদি যুক্তি নির্ভর সেই নাস্তিকদের করা হয়, 

“যুক্তি দিয়ে কি প্রমাণ করতে পারা যায় যে বিজ্ঞান আসলে অবৈজ্ঞানিক?" যদি যুক্তি দিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া সম্ভব হতো তবে ঈশ্বরকে আবিজ্ঞেয় বলা হতো না। ঈশ্বর আছে এটি প্রমাণ করার যতটা দায় বিশ্বাসীদের, ঈশ্বর নেই সেটা প্রমাণ করার ততটা দায় অবিশ্বাসীদেরও আছে।

ঈশ্বরের ক্ষমতা নিয়ে আরেকটি বড় অদ্ভুত প্রশ্ন।

ঈশ্বর কি পাপ করতে পারেন?

হ্যা, ঈশ্বর পাপকর্ম করতে পারেন। কিন্তু সেই পাপ কর্মকে পাপ বলা হবে না। কারণ তিনি পূণ্য বা পাপ কোনো কর্ম করলেও কর্মে লিপ্ত হন না। এর কারণ “তাঁর নির্লিপ্ততা।”

তাই গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম ভাবে কর্মে নিয়োজিত হতে বলছেন। শুধু ঈশ্বর নন, মানুষ যদি নির্লিপ্ত ভাবে কর্ম করেন। সেটিও পাপ বলে গণ্য হবে না। 

যেমন সেনা বাহিনীতে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় দুষ্কৃতীদের হত্যার জন্য। একজন সৈনিক যদি নিজের কর্মরত অবস্থায় নিজের সার্ভিস রিভলবার দিয়ে কোন দুষ্কৃতীকে হত্যা করেন, তবে তাকে পুরস্কৃত করা হয়। কিন্তু সেই একই সৈনিক যদি ক্রোধ বশত, বা  ঈর্ষায় বশীভূত হয়ে বা নিজের অজান্তে কাউকে খুন করেন। তবে সেই একই সংবিধান অনুযায়ী তাকে শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু ওই অস্ত্রের (সার্ভিস রিভলবার) দোষ হয় না। ঈশ্বর এভাবেই পূণ্য ও পাপ উভয় থেকে মুক্ত। হ্যা তিনি চাইলে পূণ্য ও পাপ উভয় কর্মই করতে পারেন। তিনি চাইলে নিজেকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন। তিনি চাইলে সেই সীমা আবার ভাঙতেও পারেন।

এখানেই ঈশ্বরের “সর্বশক্তি” প্রকট — শুধু কর্মে নয়, নির্বাচনের স্বাধীনতাতেও। এটাই তো তাঁর সর্ব শক্তিমান হওয়ার প্রমাণ।

ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সীমা মানেই দুর্বলতা নয়

সর্বশক্তিমান মানে এই নয় যে তিনি সবকিছুই করতে পারেন — এমনকি যুক্তিহীন কাজও। বরং তিনি এমন কাজ করতে পারেন যা মানব যুক্তির বাইরে, তবু একটি ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।

 উপসংহার:

এই পাথরের প্রশ্নটি ঈশ্বরকে প্রমাণ বা অপ্রমাণ করার যুক্তি নয় — বরং এটা মানুষের যুক্তির সীমা প্রকাশ করে। মানুষ ঈশ্বরকে সীমিত শর্তে সীমিত করতে চায়। তাই যে সকল ঈশ্বরের ধারণা গুলো ভ্রান্ত মতবাদ অথবা সৃষ্ট। সেই ঈশ্বরের অনুসারীরা এই প্যারাডক্স কাটিয়ে উঠতে পারে না।

আমরা ঈশ্বরের ক্ষমতা বোঝার চেষ্টা করি, কিন্তু ভুলে যাই: “যে যুক্তি ঈশ্বরকে মাপতে চায়, সেই যুক্তিরও এক সীমা আছে।”

এমন অনেক কিছুই আছে যা যুক্তির বাইরে, কিন্তু আস্থায় ও অনুভবে ধরা পড়ে। ঈশ্বর সেই অনুভবের জায়গা — যুক্তির গণ্ডির বাইরে, কিন্তু চেতনার ভেতরে।

লেখকের বক্তব্য

এই লেখাটি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় দর্শনের প্রচার নয়, বরং একটি দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক আলাপনার অংশ — যাতে ঈশ্বর, যুক্তি ও মানুষের উপলব্ধির সীমা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আপনি কী ভাবছেন এই প্রশ্নটি নিয়ে?
কমেন্টে মতামত দিন এবং শেয়ার করুন, যদি লেখাটি মূল্যবান মনে হয়।

0 Comments:

Smart Ads for Smart Businesses Ads by TDads