কার্তিক মহারাজের উপরে উঠলো অপকর্মের মিথ্যা অভিযোগ


পদ্মশ্রী প্রাপ্ত কার্তিক মহারাজের উপরে চাপনানো হলো প্রতারনা ও ধর্ষনের অভিযোগ। এটি কি মিথ্যা অভিযোগ? নাকি লুকিয়ে আছে কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র? আসুন জেনে নিন।

আরোপ কি?

আরোপ করা হয়েছে যে, পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত কার্তিক মহারাজ তাঁর আশ্রমে চাকরি দেওয়ার নাম করে দীর্ঘদিন অপকর্ম করেছেন এক মহিলাকে।

চানক স্কুলে শোষণ:

মহিলার নিজস্ব বিবৃতি অনুযায়ী —“২০১৩ সালে ওই তিনি চানক স্কুলে কাজের জন্য যান। প্রথমে তাকে টিচার্স রুমে রাখা হয়, তারপর কার্তিক মহারাজের নির্দেশে ওই আশ্রমের পাঁচতলার হল ঘরেই তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়। একদিন রাত পনে ১০টা নাগাদ কার্তিক মহারাজ ফোন করেন এবং তিনি ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করবেন বলে আসেন। সেই রাতেই ওই মহিলা, মহারাজের জন্যে চেয়ার পেতে বাথরুমে স্নান করতে যান। বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এসে দেখেন যে মহারাজ চেয়ারে না বসে, ওই মহিলার বিছানার উপর বসে আছেন।এর ওপর মহারাজ বড় লাইট নিভিয়ে জিরো লাইট জ্বালিয়ে রাখতে বললেন। সেই রাতে তাঁর সঙ্গে ওই মহিলার প্রথম ঘনিষ্ট সম্পর্ক হয়। 

মহিলার বিবৃতি অনুযায়ী, এর পর প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর তিনি ওই মহিলার কাছে যেতেন। মহিলা নিরুপায় হয়ে নির্যাতন সহ্য করতেন। কারণ তিনি নিজেই ঘর ছেড়ে আশ্রমে এসেছিলেন। 

বেলডাঙ্গার আশ্রমের ঘটনা:

এর পর মহিলা বলেন, বেলডাঙ্গার আশ্রমে তাঁদের পুনরায় সম্পর্ক হয় এবং সেই সম্পর্কের ফলে জুন মাসে মহিলা গর্ভবতী হয়। ওই মহিলা আশ্রমের চিকিৎসালয়ে টেষ্ট করেই এটি জানতে পারেন। 

এই ঘটনা জানার পর মহারাজ নিজের সম্মান বাঁচাতে মহিলার কাছে প্রাণ ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। তখন ঐ মহিলাই মহারজকে বাঁচাতে পরামর্শ দেন যে, তাকে অন্য একটি স্কুলে পাঠিয়ে দিয়ে বলতে হবে সন্তান সম্ভবা অবস্থায় তার ডিভোর্স হয়েছে। 

কিন্তু মহারাজ মহিলার এই প্রস্তাব মেনে নেন না। সবশেষে ওই মহিলা বড়দি (প্রিন্সিপাল) এর সহায়তায় অবাঞ্ছিত গর্ভস্থ সন্তান আবর্শন করান।

Fact চেক:

প্রথমেই খটকা, ২০১৩ সালে যে ঘটনা ঘটেছে, তার অভিযোগ এখন কেন আসছে? অর্থাৎ ওই মহিলার কি কোথাও ওই সম্পর্কে সহমতি ছিলো? 

দ্বিতীয় খটকা, রাতে ফোন পাওয়ার পর দরজা খোলা রেখে রাত পনে ১০টায় কে স্নান করতে যায়? যদিও ধরুণ তিনি সত্যিই সত্যিই ১০:১৫ নাগাদ স্নানে গিয়েছিলেন। দরজা খুলে রাখলেন কেন? তারমানে তিনি জানতেন কিভাবে জালে ফেলতে হয়। তার বক্তব্যের ভিত্তিতেই তো সত্য প্রমাণ হয় না। ঘটনার বিবরণ স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। 

মহারাজ যেই হোক না কেন, ১৫ দিন অন্তর অন্তর সম্পর্ক হতো, তিনি নিজের সন্মান বাঁচানোর জন্য কোনো চেষ্টাও করেনি, উল্টে ১৫ দিন অন্তর অন্তর তিনিও সেই শোষণ মুখ বুজে সহ্য করেছেন, এটা কেমন কথা?

সাধারণত মহিলারা স্নান করতে গেলে দরজা বন্ধ করে রাখেন। এবং  জানেন যে মহারাজ দেখা করতে আসছেন। তাও দরজা বন্ধ না করেই বাথরুমে ঢুকে গেলেন। এটা ঠিক একটি হজম হচ্ছে না। 

 বেলডাঙ্গা আশ্রমের তাঁদের সম্পর্ক স্থাপনের পর ওই মহিলা গর্ভস্থ হয়। তখন কার্তিক মহারাজ নাকি প্রাণ ভিক্ষা করলে ওই মহিলার মন বিগলিত হয়। তখন ওই মহিলাই নাকি কার্তিক মহারজকে বাঁচাতে পরামর্শ দেন। কোনো মহিলা নিজের মান সম্মান নিয়ে চিলিমিলি করা পুরুষকে কি এত সহজে ছেড়ে দেবে? 

তারপর বলা হয়েছে, এবরশন করা হয়েছে। এবরশন করতে গেলেই আইনী ঝামেলায় পড়তে হবে। কোনো প্রমাণ সে দেখাতে পারলো না।

এগুলোই প্রমাণ করে যে এই ঘটনা সাজানো নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়। তার নিজের কথার মধ্যেই সঙ্গতি নেই। আশ্রম ওয়েব সিরিজ দেখেছেন ? এটা সেরকমই একটা কাহিনী। সত্যতার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। ডাহা মিথ্যা কথা বলছেন। এই সব মিথ্যা ষড়যন্ত্র, সব সাজানো নাটক।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ একটি গুরুতর বিষয়, যা বর্তমানে পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে। অভিযোগটি ২০১৩ সালের ঘটনার উল্লেখ করে, তবে ২০২৫ সালে দায়ের হয়েছে, যা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে কার্তিক মহারাজের বিজেপি সমর্থন এবং আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে। তবে, অভিযোগকারিণীর বিবৃতি এবং তাঁর পরিস্থিতিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার দাবি রাখে। সত্য উদঘাটনের জন্য তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষা করা উচিত। আমরা সকলকে এই বিষয়ে সংযত ও নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানাই।

আমরা যা বিশ্লেষণ করতে পেরেছি তাহা বললাম। এতে আপনার কি মতামত?

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Advertisement