মহেশতলা দাঙ্গা: পূর্বপরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে উত্তাল স্থানীয় জনতা
প্রতিবেদন: স্বাধীন বিশ্লেষণ। মহেশতলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, তারিখ: ১৩ জুন ২০২৫
🔥 ঘটনার শুরু: একটি তুলসী গাছ ঘিরে
সাম্প্রতিক ঈদ উপলক্ষে বন্ধ থাকা এক মুসলিম ফল বিক্রেতার দোকানের সামনে কয়েকজন হিন্দু যুবক একটি তুলসী গাছ রোপণ করেন। স্থানীয় মুসলিম পরিবারের কিছু সদস্য এতে আপত্তি জানালে বিষয়টি নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। খুব দ্রুত সেই বাকবিতণ্ডা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
🧨 সংঘর্ষের ধরন: সুপরিকল্পিত ও একতরফা?
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি অনুযায়ী, সংঘর্ষ চলাকালীন:
বহু হিন্দু মালিকানাধীন দোকান বেছে বেছে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
হামলাকারীরা ছিল মূলত ২১–২৬ বছর বয়সী যুবক, অনেকের মুখ ঢাকা ছিল।
অনেকেই স্থানীয় মাদ্রাসার ছাত্র, এমন দাবিও করেছেন বাসিন্দারা।
ঘটনাস্থলের একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হিন্দু মন্দির সংলগ্ন দোকান, ছোট ব্যবসা ও ঘরবাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। এতে এটা স্পষ্ট যে, হামলা তাৎক্ষণিক উত্তেজনার ফল নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত ছিল।
📍 কেন সন্দেহ স্থানীয় মুসলিম গোষ্ঠীর দিকে?
বহিরাগতরা সাধারণত দোকানমালিকের ধর্ম জানে না।
তাই হামলাকারীরা যদি “বেছে বেছে হিন্দু দোকান” লক্ষ্য করে থাকে, তাহলে তারা অবশ্যই স্থানীয় কারো নির্দেশ বা সহায়তা পেয়েছে—এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এতে স্থানীয় মুসলিমদের একটি অংশের সরাসরি সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা উঠে আসছে।
🚔 প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঘটনার পর এলাকায় ভারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৪১ জনকে, যাদের মধ্যে একজন বিজেপি কর্মী রয়েছেন।
তবে বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধারের ঘটনা এবং একজন বিজেপি কর্মীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
বিজেপির দাবি, প্রকৃত হামলাকারীদের আড়াল করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশানা করা হচ্ছে।
🗣️ রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস আখ্যা দিয়ে NIA তদন্ত দাবি করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে হামলাকারীদের ধর্মীয় পরিচয় আড়াল করছে।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করছে, সংঘর্ষে উসকানি দিয়েছে বিজেপি—এই নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি।
📣 স্থানীয় জনতার অভিমত
স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলির দাবি—তাদের ধর্মীয় পরিচয় ও ব্যবসা টার্গেট করে এ হামলা হয়েছে।
অনেকে বলেন, "এটা আকস্মিক সংঘর্ষ ছিল না—এটি ছিল সুপরিকল্পিত, ভয়ংকর এবং সাম্প্রদায়িক।"
✅ উপসংহার
মহেশতলার এই দাঙ্গা শুধুই একটি সংঘর্ষ নয়, বরং এটি এক ধরনের সাংগঠনিক ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ, যেখানে ধর্ম, পরিচয় এবং পরিকল্পিত সহিংসতা একসঙ্গে কাজ করেছে।
যদি ভিডিও, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ এবং দোকানভাঙার প্যাটার্ন সত্য হয়, তবে এটি স্পষ্টতই একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাম্প্রদায়িক হামলা।
এখন সময়, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থা সত্য উদ্ঘাটনে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিক—আর দোষী যে-ই হোক না কেন, তার শাস্তি নিশ্চিত হোক।
0 Comments: