ভ্রামক প্রচারে মামলায় স্বস্তি পেলেন না যোগগুরু বাবা রামদেব

ramdev's illigal campainig

পতঞ্জলি ফার্মার ভ্রামক প্রচারে মামলায় স্বস্তি পেলেন না যোগগুরু বাবা রামদেব এবং তাঁর সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণ।  এই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত রামদেবের কৌঁসুলির উদ্দেশে বলেন, “উনি মোটেই নিরপরাধ নন।”

মঙ্গলবারের শুনানিতে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করেন রামদেব। যোগগুরুর হয়ে আদালতে প্রশ্ন করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তাঁর মাধ্যমে রামদেব বলেন, “আমি এ ক্ষেত্রে যা করেছি, তা ঠিক করিনি। আমি ভবিষ্যতে বিষয়টি মাথায় রাখব।” তার পরই যোগগুরু জানান, তিনি প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করতে প্রস্তুত।

আসলে FSSAI (Food Safety and Standards Authority of India)  —এর নিয়ম অনুযায়ী কোনো খাদ্য উৎপাদক সংস্থা ডায়াবিটিস, ক্যান্সার, অ্যাস্থমা প্রভৃতি রোগের নিরাময়ের 100% গ্যারেন্টি দেওয়া যাবে না। সেই নিয়ম ভঙ্গ করায় আদালতে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (IMA) মামলা দায়ের করেন। যোগগুরু বাবা রামদেব এবং তাঁর সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণকে ২ সপ্তাহে জবাবদিহি করতে বলা হয়। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোনরকম জবাব না আসায় উচ্চ আদালত কোমড় বেঁধে পতঞ্জলি ফার্মেসির ভ্রামক প্রচারে বিরুদ্ধে নেমে পড়ে।

সুপ্রিম কোর্ট ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (IMA) আবেদনের সেই মামলায় শুনানি করছে, যেখানে বাবা রামদেবকে করোনা ভ্যাকসিন এবং অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আদালত এর আগে বাবা রামদেবকে নোটিশ জারি করে আদালতে তলব করেছিল। "যদি পতঞ্জলি রোগ নিরাময় নিয়ে কোনও মিথ্যা দাবি বা প্রচার চালায়, তবে প্রতিটি পণ্যের উপরে ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হবে"। সেই তলব না মানায় বাবা রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণের কাছে তিন সপ্তাহের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞাপন ছাপানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি আদালতে আশ্বাস দিলেও তা সত্ত্বেও বিজ্ঞাপন ছাপা হয়। এ ব্যাপারে আদালত কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

তবে রামদেবের ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাবের পরেও সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে রেহাই দেয়নি। বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুল্লার বেঞ্চ জানায়, "রামদেব ক্ষমা চাইলেও, তা স্বীকার করবে কি না, তা ভেবে দেখা হবে"। এই প্রসঙ্গে দুই বিচারপতিদে  বলে, “আপনার পুরনো ইতিহাস খারাপ। আপনার ক্ষমাপ্রার্থনা আমরা গ্রহণ করব কি না, তা ভেবে দেখব।”

IMA এর প্রশ্ন উদ্দেশ্য নিয়ে উঠছে: 

বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানউল্লাহ এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে তিনি বাবা রামদেবকে 'সমূল উফরে ফেলা'র মতো ভাষার প্রয়োগ করেন। ন্যায় দাতা কিভাবে এমন শব্দ ব্যবহার করতে পারেন? আদালত বলেছে সংবাদ পত্রে বড় বড় করে ক্ষমা পত্র ছাপাতে হবে। আদালত বলছে, তারা এ ব্যাপারে কোনো নমনীয়তা দেখানো হবে না।

পতঞ্জলি মামলায় যে কঠোরতা দেখানো হচ্ছে বিচারপতির আমানউল্লাহর এমন মন্তব্য শোনার পর সাধারণ মানুষের প্রশ্ন উঠছে । জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে IMA-র অভিযোগের পর পতঞ্জলির সঙ্গে যা ঘটছে তার পিছনে বিভ্রান্তিকর প্রচার নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে?

পতঞ্জলির গ্রাহকরা সোস্যাল মিডিয়ায় এমন পণ্যের নাম দিচ্ছেন যা ভুয়ো দাবি করে বিক্রি করা হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু তবুও IMA তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা কেন ভাবেনি?

এই পণ্যগুলির উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে Lifeboy মতো পণ্য, যা জীবাণুকে 99% মেরে ফেলার দাবি করে।

বাজারে কিছু বিপজ্জনক এনার্জি ড্রিংক যেমন রেডবুল, স্টিং,  বিক্রি হচ্ছে যা  স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। Real juice আসলেই কি real ? পেছনে ছোট্ট করে লেখা থাকে "ফ্রুট ফ্লেবার অ্যাডেড"।

এনার্জি ড্রিংক স্টিং

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ও এই প্রসঙ্গ তুলেছেন। তার শেয়ার করা একটি ভিডিওতে তিনি রামদেবের পক্ষ নিয়ে এই মামলার বিপক্ষে তিরস্কার জানিয়েছেন।

তিনি ১৯৫৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সেই প্রণীত আইনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "এই আইনে বলা হয়েছে কিছু কিছু রোগের (যেমন- অন্ধত্ব, বধিরতা, তোতলানো, তোতলানো, ক্যান্সার, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উন্মাদনা, পক্ষাঘাত, পুরুষত্বহীনতা, বন্ধ্যাত্ব, টিবি, টিউমার) জন্য প্রচার করা যাবে না।"

অশ্বিনী উপাধ্যায় দাবি —"এই নিয়ম নেহেরু সেই সময়ে একটা আমেরিকান লবীর চাপের মধ্যে নিয়েছিলেন। যখন এই সকল রোগের কোন ধরনের চিকিৎসা তাদের কাছে ছিল না। আজ যেহেতু পতঞ্জলি এই ধরনের রোগের প্রতিষেধক বলছে এবং নিজেই প্রচার করছে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতা দেখানো হচ্ছে।"

আচ্ছা তাহলে এই অ্যাডর প্রচার ভেবে দেখুন গুলো দেখুন:

মাউন্টেন্ট ডিউ : এই এনরাজি ড্রিংক খাওয়ার পর একজন বাইক আরোহী পাহাড় ডিঙিয়ে যাচ্ছে। "ডার কে আগে জিত হ্যা'। 

ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি : 7 দিনে ফর্সা বানানোর কথা বলে। ভারতের কতজন মানুষ ফর্সা হয়েছে?

হরলিক্স: এর মধ্যে চিনি অত্যধিক পরিমাণে থাকে। যা মোটেও স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। কিন্তু দেখানো হয় এতে আছে গমের শক্তি।

রিয়াল জুস: এটি শুধু ব্র্যান্ড নেম। আসলে এর মধ্যে  অ্যাডেড সুগার, বেঞ্জয়েড ফ্লেবার, এবং ফুড কালার থাকে। প্যাকেটের গায়ে খুব ক্ষুদ্র আকারে লেখা থাকে। এটি ব্র্যান্ড নেম। 

এভাবেই বিদেশী পণ্য আমাদের দেশের বিক্রি করা হয়। আর যখন ভারতীয় পণ্য বিক্রি করা হয়। তখন এর ওপর IMA ভ্রমক প্রচারের আরোপ করে।  IMA আয়ুর্বেদকে চিটিংবাজ বলছে। উইকিপিডিয়া আয়ুর্বেদ কে ছদ্দ বিজ্ঞান বলছে। যেখানে পৃথিবীর সমস্ত ঔষধি ভেষজ এবং বনস্পতি থেকে তৈরি হয়। 

এ্যালোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি ঔষধ বিভিন্ন গাছ-গাছার থেকে তৈরি হয়। মজার বিষয় হল, এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি উভয়েই ভারতের বাইরে উৎপন্ন হয়েছে। কিন্তু এলোপ্যাথিক ইন্ডাস্ট্রি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকে Placebo treatment বলে।

এই বিষয়ে AKTK র বিশেষ সম্প্রচার রেড ফাইল আপনাকে দেখা উচিৎ। কিভাবে, ড্রাগ মাফিয়ারা সারা বিশ্বে একচেটিয়া ব্যবসা করে চলেছে।



Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন
InterServer Web Hosting and VPS

Copying content is illegal

Please refrain from copying content.