ইসলাম কী?
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে ইসলাম নামক একটি মাযহব উদ্ভব হয়, কিন্তু এর বিশ্বাসীরা বলেন সৃষ্টির আদি থেকেই ইসলাম কায়েম ছিলো।
তা সে যাই হোক, এটি এক সময়, একটি নির্দিষ্ট জাতির কাছে প্রকট পেয়েছে। পরবর্তীতে এটি ধর্মীয় ব্যবস্থায় পরিণত হয়।
৭ম শতকে আরব উপদ্বীপে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলাম এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ইসলামের অনুসারীরা এক আল্লাহতে বিশ্বাস করে এবং মনে করে, এটি আল্লাহর প্রেরিত চূড়ান্ত জীবনব্যবস্থা।
ইসলামের অর্থ
"ইসলাম" শব্দটি আরবি "সালাম" থেকে এসেছে, যার অর্থ "শান্তি" এবং "আত্মসমর্পণ"। অর্থাৎ, ইসলামের মূল আদর্শ হলো আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ করা এবং তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা।
ইসলামের মূল আদর্শ
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ বা মূল আদর্শ রয়েছে—
১. শাহাদাহ (কালেমা) – একজন মুসলিমকে বিশ্বাস করতে হবে যে, "আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকারের উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ হলেন তাঁর রাসুল।"
২. সালাত (নামাজ) – প্রতিদিন পাঁচবার নির্দিষ্ট নিয়মে আল্লাহর উপাসনা করতে হয়।
৩. সাওম (রোজা) – রমজান মাসে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস রাখতে হয়।
৪. যাকাত – নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে, তার একটি অংশ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করতে হয়।
৫. হজ – জীবনে অন্তত একবার সামর্থ্যবানদের জন্য মক্কায় গিয়ে হজ পালন করা ফরজ।
এছাড়া, ইসলামে ন্যায়বিচার, দানশীলতা, মানবতার কল্যাণ এবং আত্মসংযমের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের তুলনা
সৃষ্টিকর্তার ধারণা
ধর্মগ্রন্থ
উপাসনা পদ্ধতি
মুক্তি বা পরকাল বিশ্বাস
সামাজিক কাঠামো ও বিভাজন
ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম উভয় ক্ষেত্রেই সামাজিক স্তরবিন্যাস দেখা যায়, যা মূলত ধর্মের শিক্ষার পরিবর্তে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার ফল।
ইসলামে তাত্ত্বিকভাবে সব মুসলমান সমান, তবে বাস্তবে আরব মুসলিম ও ধর্মান্তরিত মুসলিমদের মধ্যে সামাজিক পার্থক্য দেখা যায়। বিশেষ করে, আরব অঞ্চলে মুসলমানদের মধ্যে বংশগত পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেখানে ধর্মান্তরিত মুসলমানদের অনেক সময় নিম্নস্থ মনে করা হয়। যদিও ইসলামের মূল শিক্ষা অনুযায়ী এই পার্থক্যের কোনো ভিত্তি নেই, সামাজিকভাবে এটি প্রচলিত রয়েছে।
হিন্দু সমাজেও জাতিভেদ ব্যবস্থা প্রচলিত, যা মূলত সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত ছিলো। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোর বিভিন্ন ব্যাখ্যায় জাতিভেদ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। অনেক আধুনিক হিন্দু পণ্ডিত মনে করেন, জাতিভেদ ছিল মূলত কর্মভিত্তিক একটি ব্যবস্থা, যা পরবর্তীতে কঠোর সামাজিক বিভাজনে পরিণত হয়।
উপসংহার
ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম উভয়ই মানুষের নৈতিকতা, আত্মসংযম, এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেয়। যদিও ইসলামে একেশ্বরবাদ ও নির্দিষ্ট উপাসনা পদ্ধতি রয়েছে, তবু ধর্মীয় বিশ্বাস ও উপাসনার ক্ষেত্রে বহুমাত্রিকতা দেখা যায়। মানবতার কল্যাণ এবং আত্মিক উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছে।
সামাজিক বিভাজন কোনো ধর্মের মূল শিক্ষা নয়, বরং এটি মানুষের তৈরি একটি কাঠামো, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন